রাষ্ট্রপতি ভাতা পাবেন না জিয়া-এরশাদ

প্রকাশঃ আগস্ট ৩, ২০১৫ সময়ঃ ৫:১৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:০৮ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি‘রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন-২০১৫’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তবে এবার আইনটিতে নতুন কিছু বিধি বিধান যুক্ত হয়েছে। যার ফলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই অবসর ভাতা পাবেন না। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরাধিকারীরা চাইলে পেনশন নিতে পারবেন।

আইনে বলা হয়েছে, যারা অবৈধ উপায়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছেন- এই মর্মে উচ্চ আদালত রায় দিয়েছেন তারা পেনশন পাবেন না। এছাড়া যারা ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন তারাও পেনশন পাবেন না।

সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে যথাক্রমে জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। হাইকোর্টের দেয়া ওই রায়ের কারণেই সাবেক এই দুই রাষ্ট্রপতি বা তাদের উত্তরাধিকারীরা অবসর ভাতা পাবেন না। তবে তাদের দু’জনের কেউই বর্তমানে রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতা গ্রহণ না করলেও সেনাপ্রধান হিসেবে ভাতা নিচ্ছেন।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের রায়ে খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ও জিয়াউর রহমানের শাসনামল অবৈধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ও জিয়াউর রহমান সামরিক আইনের মাধ্যমে যে শাসন ক্ষমতা পরিচালনা করেছিলেন তা অবৈধ। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে জিয়ার শাসনামলকে বৈধতা দেয়া হলেও তা অবৈধ ঘোষণা করা হয় দেশের সর্বোচ্চ আদালতে।

২০১১ সালে মে মাসে এরশাদের সামরিক শাসন অবৈধ ঘোষণা করে সপ্তম সংশোধনী বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর আগে হাইকোর্ট হাইকোর্ট ২০১০ সালের ২৬ অগাস্ট সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন।

আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জারি করা সকল সামরিক ফরমান অবৈধ। তবে এ সময়ে জনহিতকর, কল্যাণকর এবং আন্তর্জাতিক যেসব চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে সেগুলোকে মার্জনা করা হয়েছে।

এছাড়া জেনারেল মঞ্জুর হত্যা মামলার প্রধান আসামি এরশাদ। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে রাডার ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলাও রয়েছে।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন-২০১৫’ অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রপতি তার জীবদ্দশায় যদি পেনশন না নিয়ে থাকেন বা কোনো নমিনি না রেখে যান এবং তার কোনো উত্তরাধিকারী পেনশন না নিয়ে থাকেন তাহলে তার উত্তরাধিকারীরা এখন থেকে পেনশন নিতে পারবে।’

সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পেনশন পাবেন কি না এমন প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তারা দু’জন পেনশন নিচ্ছেন না। তবে সেনাপ্রধান হিসেবে তারা পেনশন পাচ্ছেন।’ তবে আইনটিতে নতুন বিধান যুক্ত হওয়ায় রাষ্ট্রপতি হিসেবে তারা অবসর ভাতা পাবেন কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবার পেনশন পাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু পেনশন গ্রহণ করেননি। আইন অনুযায়ী তার উত্তরাধিকারীরা পেনশন পাবেন। তবে তারা পেনশন নেবেন কি না সেটা তাদের বিষয়।’

এ আইনটি প্রণনয়ের ব্যাখ্যায় সচিব বলেন, ‘১৯৭৯ সালে এ আইনটি করা হয়েছিল। পরে আটাশি সালে সংশোধনী আনা হয়। যেহেতু এ আইনটি সামরিক শাসনামলে করা হয়েছিল তাই আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলায় আপডেট করা হয়েছে। এখন নতুন আইনে এই বিধানগুলো যুক্ত করা হলো।’

 

প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G